বাংলাদেশের সাংবাদিকতা অঙ্গনে আল বারু মুস্তাকিম নিবিড় এক অনন্য নাম। তিনি দৈনিক মানবকণ্ঠের ক্রাইম অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন সেল-এর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার নির্ভীক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের মাধ্যমে দেশব্যাপী অপরাধ দমন, দুর্নীতি উন্মোচন এবং জনস্বার্থ রক্ষায় তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন।
তবে সাংবাদিক মুস্তাকিম নিবিড় শুধু একজন রিপোর্টার নন, বরং তার জীবনীতে আছে সংগ্রাম, রাজনৈতিক নির্যাতন, সাহসী পদক্ষেপ এবং সত্যের জন্য লড়াইয়ের গল্প। ছাত্র রাজনীতি থেকে শুরু করে সাংবাদিকতায় তার পথচলা একদিকে যেমন কঠিন, অন্যদিকে অনুপ্রেরণামূলকও বটে।
ছাত্র রাজনীতি থেকে সাংবাদিকতায়
আল বারু মুস্তাকিম নিবিড়ের রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় ছাত্রজীবনে। তিনি বিএনপি'র অঙ্গসংগঠন ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন এবং পরবর্তীতে ৪৬ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করেন। রাজনীতির মাঠে তার কর্মতৎপরতা ছিলো অত্যন্ত প্রাণবন্ত।
কিন্তু শেখ হাসিনার শাসনামলে তিনি একাধিক মিথ্যা মামলার শিকার হন। সহকর্মীরা জানান, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তাকে নানা ধরনের হয়রানি ও কারা নির্যাতনের মুখোমুখি হতে হয়েছিল।তিনি শেখ হাসিনার আমলে মিথ্যা মামলায় তিন মাস কারাবন্দী থাকেন। তবুও তিনি নতি স্বীকার করেননি।
এই সময়ের পর তিনি রাজনীতি থেকে সরে আসেন এবং সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন। তবে রাজনীতির অভিজ্ঞতা তার লেখনীতে বাস্তবতা ও বিশ্লেষণকে আরও শক্তিশালী করেছে।
নিরপেক্ষ ও অনুসন্ধানী সাংবাদিক
সাংবাদিকতায় যুক্ত হওয়ার পর থেকেই আল বারু মুস্তাকিম নিবিড় নিরপেক্ষতার নীতি মেনে চলছেন। তার শত শত অনুসন্ধানী প্রতিবেদন জনসচেতনতা তৈরি করেছে।
অপরাধ জগত, মাদক কারবার, দুর্নীতি, মানব পাচার কিংবা ক্ষমতাসীনদের অব্যবস্থাপনা—কোনো বিষয়েই তিনি কলম থামাননি। বরং নির্ভীকভাবে প্রতিবেদন প্রকাশ করে সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করেছেন।

মানবকণ্ঠ পত্রিকার সহকর্মীরা জানান, নিবিড় সবসময় মাঠে থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে পছন্দ করেন। ডেস্কে বসে সাংবাদিকতা করার চেয়ে মাঠপর্যায়ে গিয়ে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা নেওয়াই তার কাজের প্রধান বৈশিষ্ট্য।
গণঅভ্যুত্থানে সক্রিয় ভূমিকা
২০২৪ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ মোড় নেয়। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান সারা দেশে আলোড়ন তোলে। সেই আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন আল বারু মুস্তাকিম নিবিড়।
তিনি শুধু একজন প্রতিবাদী নাগরিক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন না, বরং সাংবাদিকের দায়িত্বও পালন করেন। আন্দোলনের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত তিনি প্রতিবেদনে তুলে ধরেন, যা পরবর্তীতে ঐতিহাসিক দলিল হয়ে থাকবে।
দৈনিক মানবকণ্ঠের এক সিনিয়র সাংবাদিক বলেন,
“নিবিড় আমাদের জন্য এক অনুপ্রেরণা। তিনি সত্য প্রকাশে কখনো ভয় পান না। তার সাহসী প্রতিবেদনের কারণে অনেক অপরাধ চক্র ভেঙে পড়েছে।”
একজন গণমাধ্যম বিশ্লেষক মন্তব্য করেন,
“বাংলাদেশে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে আল বারু মুস্তাকিম নিবিড়ের অবদান উল্লেখযোগ্য। তরুণ সাংবাদিকদের জন্য তিনি একটি জীবন্ত মডেল।”
একজন সমাজবিজ্ঞানী জানান,
“নিবিড়ের প্রতিবেদনের প্রভাব শুধু পাঠকের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। তার অনুসন্ধান সরকার ও প্রশাসনকেও নড়েচড়ে বসতে বাধ্য করে।”
ব্যক্তিত্ব ও দর্শন
নিবিড় বিশ্বাস করেন—সাংবাদিকতা শুধু পেশা নয়, এটি একটি দায়িত্ব। তিনি বারবার বলেছেন, “সত্যকে লুকানো যায় না, দমন করা যায় না। সাংবাদিকের কলমই অন্যায়ের বিরুদ্ধে সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র।”
তার নীতি হলো ‘নিরপেক্ষতা, সাহসিকতা ও জনকল্যাণ’।
আল বারু মুস্তাকিম নিবিড়ের জীবনী বাংলাদেশের সাংবাদিকতার ইতিহাসে একটি উজ্জ্বল অধ্যায়। তিনি ছাত্র রাজনীতির অঙ্গন থেকে উঠে এসে নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার মাধ্যমে নিজের অবস্থান তৈরি করেছেন। রাজনৈতিক নির্যাতন, মিথ্যা মামলা কিংবা প্রতিহিংসা তাকে দমাতে পারেনি।
আজ তিনি শুধু একজন ক্রাইম রিপোর্টার নন, বরং একজন নির্ভীক যোদ্ধা, যিনি কলম দিয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে যাচ্ছেন।
বাংলাদেশের তরুণ সাংবাদিকদের জন্য তার জীবন একটি আলোকবর্তিকা—যা শেখায় কিভাবে সত্যের পক্ষে দাঁড়াতে হয়, কিভাবে সাহস নিয়ে জনস্বার্থে কাজ করতে হয়।
Publisher: Mustakim Nibir
Copyright © 2025 The Times OF Dhaka. All rights reserved.