অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড: মুহাম্মদ ইউনূস বন্যা সম্পর্কিত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত তথ্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) বিকেলে ঢাকার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মার সঙ্গে প্রথম সাক্ষাতের সময় তিনি এ মন্তব্য করেন।
সাক্ষাতের পর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তিনি জানান, ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা ত্রিপুরার বন্যা পরিস্থিতি সম্পর্কে বলেছেন, এ ধরনের বৃষ্টিপাত ভারতের জন্যও অপ্রত্যাশিত ছিল। ড: ইউনূস সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত তথ্যকে দুঃখজনক বলে অভিহিত করেছেন।
বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চল ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে, যেখানে ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাগুলোতে প্রাথমিকভাবে দুজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। প্রায় ৪ লাখ ৪০ হাজার ৮৪০টি পরিবার বর্তমানে পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে।
বন্যার কারণ হিসেবে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের ডুম্বুর জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের বাঁধ খুলে দেওয়াকে দায়ী করা হচ্ছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামও বৃহস্পতিবার এ ব্যাপারে ভারতের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, “কোনো ধরনের পূর্বসতর্কতা ছাড়াই বাঁধ খুলে দেওয়ায় ভারত অমানবিক আচরণ করেছে। এর সুষ্ঠু সমাধান করতে হবে।”
তবে ভারত সরকার এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, বাংলাদেশের বন্যা ডুম্বুর জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের বাঁধ খুলে দেওয়ার কারণে হয়নি। ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গোমতী নদীর ক্যাচমেন্ট এলাকায় সাম্প্রতিক দিনগুলিতে ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে, যা বাংলাদেশের বন্যার প্রধান কারণ।
বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, এ বছরের বর্ষায় স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে আগেই সতর্ক করা হয়েছিল। আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ উল্লেখ করেছেন, এপ্রিল মাসে ভারতের পুনেতে অনুষ্ঠিত সাউথ এশিয়ান ক্লাইমেট আউটলুক ফোরামের একটি সভায় বলা হয়েছিল যে, এবারের বর্ষায় বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারতের উজানের রাজ্যগুলোতেও বেশি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।