মুস্তাকিম নিবিড়ঃ
ছাত্র জনতার বুকের তাজা রক্তের মাধ্যমে তরান্বিত হয়েছে স্বৈরাচারের পতন, তাকে পুঁজি করে আবার লুটপাট ও ক্ষমতার নগ্ননৃত্যে মেতে উঠতে ওত পেতে বসে আছে সন্ত্রাস চাঁদাবাজ রুপধারী হায়না শকুনেরা। মনে রাখতে হবে " সন্ত্রাসীদের কোন দল নেই " বিগত সময় এরা বিভিন্ন পটভূমিতে বিএনপি, আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি সহ অন্যান্য দলীয় রূপ ধারণ করেছে। অর্থের বিনিময় বাগিয়ে নিয়েছে দলীয় পদ পদবী। ১০ থেকে ১৫ টি খুনের মামলার আসামিরা ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের থানা ওয়ার্ড পর্যায়ের সভাপতি সেক্রেটারি। তাদের মুখে মুখে রাজনৈতিক কথাবার্তা, আর কর্মকাণ্ডে মাদক ব্যবসা আর চাঁদাবাজি। সন্ত্রাস চাঁদাবাজি মাদক ব্যবসাকে আড়াল করতে যুগে যুগে এসব সন্ত্রাসীরা রাজনৈতিক পদ পদবি নিয়ে সমাজের সাধারণ জনগণকে শোষণ করে চলছে। সমাজ ও রাষ্ট্রকে গ্রাস করে দুর্নীতি অনিয়ম ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের মাধ্যমে বিভিন্ন সময় গড়ে ওঠে নানান সিন্ডিকেট। বিগত সময় রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর প্রশ্রয়ে তৈরি হয়েছে বিভিন্ন সন্ত্রাসী বাহিনী বা গোষ্ঠী। তাদের গডফাদারই দেশের বিভিন্ন সেক্টরে লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করেছে। বিগত বছরগুলোতে দেশের স্বাস্থ্য, সড়ক, শিক্ষা, কৃষি, শেয়ার বাজার, ব্যাংক, এলজিইডি সহ সকল সেক্টরেই দুর্নীতিবাজরা বিষদাঁত বসিয়েছে। শহর, নগর, পাড়া মহল্লায় টেন্ডারবাজি চাঁদাবাজি দখলদারিত্বে দেশবাসীর নাভিশ্বাস উঠে গেছে। বিগত সময়ে বিনা ভোটের স্বৈরাচারী সরকারী দলের পাতি নেতারা ঢাকা শহর সহ সারা দেশে ভয় সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের রাজত্ব কায়েম করে লুটে নিয়েছে শত সহস্র কোটি টাকা।
সম্প্রতি ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া হাসিনা ও তার দোসররা গা ঢাকা দিলেও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের মুখোশ পরে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করে দিয়েছে কতিপয় সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। এদের মধ্যে কেউ কেউ সদ্য কারাগার থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত শীর্ষস্থানীয় সন্ত্রাসীদের সাংগোপাঙ্গ। তাদের মধ্যে কেউ কেউ লুট করছে জন সাধারনের ব্যাবসা বানিজ্য, বাড়িঘর। যদিও তাদের মূল টার্গেট সরকারি স্থাপনা, জমি-বাজার - বাস স্ট্যান্ড দখল করা ও এ সকলের সমন্বয়ে অবৈধ আয়ের উৎস তৈরি করা। অস্থির সময়কে কাজে লাগিয়ে ছাত্র জনতার বুকের তাজা রক্তের মাধ্যমে অর্জিত স্বৈরাচার মুক্ত নতুন স্বাধীন বাংলাদেশকে আবারো সন্ত্রাসের অভয়ারণ্য করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক দলের মুখোশ পরা বিভিন্ন চাঁদাবাজী ও খুনের মামলার আসামিরা, তাদেরকে হরহামেশাই দেখা যায় দলবল নিয়ে অলিগলিতে শোডাউন দিতে, প্রত্যেক শোডাউনে একটা না একটা স্থাপনা দখল করা, না হয় বিরোধীদের বাড়ি ভাঙচুর অতঃপর নিজেদের মাঝেই চাঁদার টাকা ভাগাভাগি নিয়ে হট্টগোল। বিগত সরকারের সময় গুলোর মত এরাও কোন না কোন রাজনৈতিক দলের মুখোশ পড়ে প্রভাব বিস্তার করছে পুলিশ প্রশাসনের উপর। এসব ছিচকে সন্ত্রাসী, মাস্তান ও তাদের গডফাদারদের পৃষ্ঠপোষক রাজনৈতিক রাঘববোয়ালদের পুলিশের উপর দলীয় প্রভাব বিস্তার করার কারণে বাংলাদেশ পুলিশ দেশের ছাত্র জনতার জনরোষোর মুখে বিপর্যস্ত অবস্থায় পরে যায়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনি পুলিশের সক্রিয়তা কমে যাওয়ায় মামলার ওয়ারেন্ট ধরিরাও দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে, পারামহল্লায় চালাচ্ছে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি হুমকি-ধমকির রাজত্ব। এ সকল থানা ওয়ার্ড পর্যায়ের রাজনীতির মুখোশ পরা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীদের আতঙ্কে দিশেহারা হয়ে পড়ছে সাধারণ জনগণ। তাদের দৌরাত্ম থেকে পরিত্রান পেতে সাধারণ জনতা বেশিরভাগ সময়ই সেনাবাহিনীর দারস্থ হচ্ছে। বিভিন্ন সময় সেসব পরিস্থিতি সামাল দিয়ে সেনাবাহিনী সদস্যরা ফিরে গেলেও কাটছে না আতঙ্ক। তাই বোদ্দা জনেরা মনে করছে এসব অঞ্চলভিত্তিক চাঁদাবাজ সন্ত্রাস, দুর্নীতির রাঘব বোয়ালদের পাশাপাশি চুনোপুটিদের লাগাম টেনে ধরতে বাংলাদেশের শতভাগ জনগণের আস্থাপুষ্ট সেনাবাহিনীর সাঁড়াশি অভিযান প্রয়োজন। তারা প্রত্যাশা করছে সন্ত্রাস, দুর্নীতিবাজদের রুখে দিতে টাস্ক ফোর্স গঠন ও সেনা অভিযানের মাধ্যমে দেশ ও নগর জীবনে স্বস্তির ছায়া ফিরিয়ে আনা হোক। এক্ষেত্রে তার আরাও দাবি করেন, যাদের নামে অস্ত্র, মাদক, চাঁদাবাজি ও দুর্নীতির মামলা রয়েছে তাদের তালিকা ধরে আইনের আওতায় এনে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে নির্বাচনের সময় ঘোষণার পূর্বেই দেশকে শান্ত ও স্থিতিশীল করে দুর্নীতি ও সন্ত্রাসমুক্ত করা হোক। সন্ত্রাস চাঁদাবাজ ও দুর্নীতিবাজদের নিয়ে বিস্তর অনুসন্ধান চালাচ্ছে দৈনিক নওরোজ, দেশের স্বার্থে ধারাবাহিকভাবে ঐ সকল দুর্নীতিবাজ সন্ত্রাসদের পূর্ণাঙ্গ বিবরণ সহ দৈনিক নওরোজের বিশেষ প্রতিবেদন চলমান থাকবে।
Publisher : Mustakim Nibir
© All rights reserved © The Times Of Dhaka