বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে ১৯৯৭ সাল একটি স্মরণীয় বছর। এই বছরটি শুধুমাত্র ক্রিকেটপ্রেমী জনগণের জন্যই নয়, পুরো জাতির জন্যই ছিল একটি গর্বের অধ্যায়। ১৯৯৭ সালে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিত আইসিসি ট্রফি ছিল বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। আইসিসি ট্রফি জয় বাংলাদেশের ক্রিকেটের আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রবেশের দরজা খুলে দেয় এবং ক্রিকেটের প্রতি জাতির প্রেম ও উদ্দীপনা বহুগুণ বৃদ্ধি পায়।
টুর্নামেন্টের শুরু
আইসিসি ট্রফি ১৯৯৭ সালে ২২টি দল নিয়ে শুরু হয়। বাংলাদেশ দল তাদের পারফরম্যান্সের মাধ্যমে সবার নজর কাড়ে। দলটি টুর্নামেন্টে অত্যন্ত দক্ষতা ও আত্মবিশ্বাসের সাথে খেলেছে, যা তাদের শক্তিশালী মনোবলের প্রতিফলন ছিল। বাংলাদেশের জন্য এই টুর্নামেন্টে ভালো করা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি তাদের প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের মূলপর্বে খেলার সুযোগ করে দিতে পারত।
ফাইনাল ম্যাচ
টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ ধারাবাহিকভাবে ভালো পারফরম্যান্স করে সেমিফাইনালে পৌঁছায় এবং সেখানে স্কটল্যান্ডকে পরাজিত করে ফাইনালে ওঠে। ফাইনালে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ছিল কেনিয়া। এই ম্যাচটি ছিল বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচগুলোর একটি। ১৩ এপ্রিল ১৯৯৭ সালে অনুষ্ঠিত এই ফাইনালে বাংলাদেশ প্রথমে ব্যাট করে ৪৯.৩ ওভারে ১৫১ রান করে। সেই ছোট লক্ষ্যে খেলতে নেমে কেনিয়া ১৪১ রানে অলআউট হয়ে যায়, ফলে বাংলাদেশ ১১ রানের জয়ে ট্রফি জিতে নেয়।
বিজয়ের মাহাত্ম্য
এই বিজয় বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য একটি নতুন যুগের সূচনা করেছিল। আইসিসি ট্রফি জয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। এই জয় শুধুমাত্র একটি ট্রফি অর্জন ছিল না, এটি ছিল জাতির আত্মবিশ্বাস এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজেদের পরিচিত করার একটি বিশাল সুযোগ।
প্রভাব ও উত্তরাধিকার
আইসিসি ট্রফি জয়ের পর বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রতি মানুষের আগ্রহ অভূতপূর্বভাবে বেড়ে যায়। দেশজুড়ে ক্রিকেটারদের সম্মান ও সমর্থন ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়। এই জয় বাংলাদেশের ক্রীড়া ইতিহাসের একটি মাইলফলক হয়ে আছে, যা আজও তরুণ প্রজন্মের মধ্যে অনুপ্রেরণা জোগায়।
বাংলাদেশের প্রথম আইসিসি ট্রফি জয় দেশকে ক্রিকেটের বিশ্বমঞ্চে প্রতিষ্ঠিত করেছে। সেই ঐতিহাসিক মুহূর্তটি এখনও বাঙালি জাতির হৃদয়ে গেঁথে আছে এবং দেশের ক্রিকেটে অনুপ্রেরণার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবেচিত হয়।
Publisher : Mustakim Nibir
© All rights reserved © The Times Of Dhaka